চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র, ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা জনগণের কাঁধে
বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়েই চলেছে সরকার। ফলে, বসিয়ে রাখা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ না কিনলেও নিয়মিত ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ। দাম বাড়িয়ে যা ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
রুফটপ সোলার বিদ্যুতে বিপুল সম্ভাবনা, বিনিয়োগে চ্যালেঞ্জ
র্তমানে নেট মিটারড এবং নন-নেট মিটারড উভয় ব্যবস্থায় ছাদে ১৬৬.৮৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা আছে। গত দেড় বছরে কয়েক দফা বিদ্যুতের মূল্য দফায় দফায় বৃদ্ধি করার ফলে এখন ছাদে সোলার বিদ্যুৎ স্থাপন অর্থনৈতিকভাবে আগের চেয়ে আরো বেশি সাশ্রয়ী ও লাভজনক।
সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য জ্বালানি: বিদ্যুৎ খাতের টেকসই উন্নয়নে করণীয়
দেশের বিদ্যুৎ খাতে গত ১৫ বছরে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সফলতা যেমন রয়েছে, তেমনি সুযোগ রয়েছে বিদ্যুৎ খাতের টেকসই উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়ার। বিশেষত আমাদের আমদানিনির্ভর জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎ খাতের মডেলে পরিবর্তন আনলে পুরো অর্থনীতিতেই তার প্রভাব পড়বে।
শীত না কাটতেই লোডশেডিং শুরু
শীত মৌসুম এখনো কাটেনি। বিদ্যুতের চাহিদা গ্রীষ্মের তুলনায় অনেক কম। দিনে সর্বোচ্চ আট হাজার মেগাওয়াট। রাতে গড়ে সাড়ে ১০ হাজার মেগাওয়াট (পিক আওয়ারে)। এটুকু বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে গিয়েও লোডশেডিং করতে হচ্ছে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন মফস্বল এলাকায়। গ্রীষ্ম মৌসুম শুরুর আগেই লোডশেডিংয়ের বিষয়টি চিন্তায় ফেলে দিয়েছে গ্রাহক থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পর্যবেক্ষকদের।
টাকার অভাব, ডলার–সংকটে বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বিপুল বকেয়া
দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত বিপুল পরিমাণ দেনা নিয়ে বিপাকে পড়েছে। একদিকে তারা টাকার অভাবে বেসরকারি কেন্দ্রগুলোকে বিদ্যুতের দাম যথাসময়ে দিতে পারছে না; অন্যদিকে মার্কিন ডলারের অভাবে বকেয়া রাখতে হচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিদেশি কোম্পানিগুলোর পাওনা। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে পাওয়া সর্বশেষ হিসাবে, দেশে উৎপাদনরত বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে পাওনা প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। পিডিবি বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) কাছে গ্যাস বিল বকেয়া রেখেছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে, উৎপাদনই এবার বড় চ্যালেঞ্জ কেন?
আগামী মাস থেকেই বাড়তে শুরু করবে বিদ্যুৎ চাহিদা। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে এবার গরমে সর্বোচ্চ চাহিদা ১৭ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে দরকার হবে বিপুল পরিমাণ তেল, গ্যাস এবং কয়লা। বিদ্যুৎ খাতে একদিকে নতুন জ্বালানি আমদানি খরচের সঙ্গে রয়ে গেছে বিপুল অঙ্কের দেনা। বেসরকারিখাতে পাওনা পরিশোধে হিমশিম খাওয়া পিডিবির এই অর্থ সংকটের সঙ্গে রয়েছে গ্যাস এবং ডলার সংকট। এ বাস্তবতায় এবার বিদ্যুৎ সরবরাহ কি লোডশেডিংমুক্ত থাকবে? সবমিলিয়ে পরিস্থিতি কতটা চ্যালেঞ্জের?
বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহে কাতার-যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি সই
বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম কাতার এরই মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এলএনজি সরবরাহকারী। কাতার এনার্জির প্রধান নির্বাহী সাদ আল-কাবি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই নতুন চুক্তি এক্সিলারেটের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও জোরদার করবে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদা এবং বৃহত্তর অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এর অগ্রযাত্রাকে সমর্থন করবে।’
২০২৪ সাল শেষে বিদ্যুতে উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়াবে ৩১ হাজার মেগাওয়াটে
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর শেষে দেশে বিদ্যুৎ খাতের মোট উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়াবে ৩১ হাজার মেগাওয়াটে। দেশে ২০২৩ সালে বিদ্যুতের দৈনিক সর্বোচ্চ গড় উৎপাদন হয়েছিল সেপ্টেম্বরে, ১৩ হাজার ২০৮ মেগাওয়াট। আর গড় উৎপাদন সর্বনিম্নে নেমেছিল জানুয়ারিতে, ৯ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটে। ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও চলতি বছর বিদ্যুতের সর্বোচ্চ গড় উৎপাদন ১৫ হাজার মেগাওয়াটের ঘরেই থাকবে। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগের ভাষ্য হলো চলতি বছর বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন প্রাক্কলন করা হয়েছে সাড়ে ১৭ হাজার মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ১০০ দিনের পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ প্রতিমন্ত্রীর
বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ১০০ দিনের পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জ্বালানি ও বিদ্যুতের চ্যালেঞ্জ বাড়বে। দক্ষ হাতে ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনের দিনগুলো আরো উন্নত ও ভালো হবে।
পাঁচ ঝুঁকিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি, প্রধান ঝুঁকি জ্বালানিসংকট: ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এখন সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ জ্বালানিস্বল্পতা। এ কারণে শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সেই সঙ্গে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিও অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। অর্থনীতিতে ঝুঁকির অন্যান্য ক্ষেত্র হচ্ছে প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া, সম্পদ ও আয়বৈষম্য এবং সরকারি ঋণ বেড়ে যাওয়া ও বেকারত্ব। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাদের বার্ষিক বৈঠকের আগে গতকাল বুধবার বৈশ্বিক ঝুঁকি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদনে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য ঝুঁকির সাধারণ ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সুনির্দিষ্ট ঝুঁকিগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের প্রসঙ্গে ঝুঁকির উল্লিখিত ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।