নবায়নযোগ্য বিদ্যুতে এগিয়েছে এশিয়া, থমকে আছে বাংলাদেশ

এশিয়ার অনেক দেশ এখন সক্ষমতার অর্ধেক বা এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। সে লক্ষ্যে এগিয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়া। এক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। এক দশকে দেশের মোট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৩ শতাংশ পার হতে পারেনি। নবায়নযোগ্য জ্বালানিবিষয়ক আন্তঃরাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সি (আইআরইএনএ) তার সদস্যরাষ্ট্রগুলোর নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা নিয়ে একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।

সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: প্রতিমন্ত্রী

বিদ্যুৎ, জ্বালানি  ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জমির বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। গ্রামের পাশাপাশি শহরের সব অব্যবহৃত ভূমি বা জলাশয় বা ভবনের ছাদগুলোর ব্যবহার বাড়িয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে।  প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে প্রকল্প নেওয়া আবশ্যক। নেট মিটারিং সিস্টেম সেভাবে এগুচ্ছে না। ডেসকো, ডিপিডিসি বা নেসকো এলাকায় সোলার রূপটপ কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। ভাসমান সোলার বা জমির বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া যেতে পারে

বিদ্যুতে ৩৭ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতা দিয়ে কী করবে বাংলাদেশ

দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা এখন ২৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট (সরকারি আরেক হিসাব অনুযায়ী ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট)। ২০২৭ সাল নাগাদ উৎপাদনে (আমদানীকৃতসহ) আসার কথা রয়েছে আরো ১৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এছাড়া চুক্তি সইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে আড়াই হাজার মেগাওয়াটের বেশি সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তবে সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে অবসরে যাবে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

Bangladesh Power Pathways Newsletter, February 2023

Welcome to the Bangladesh Power Pathways Newsletter which tracks the narrative and progress in the energy and power nexus of Bangladesh. This monthly newsletter seeks to provide an overview of the discourse in the country’s energy/climate sector.

পাকিস্তানের বিদ্যুৎ খাতের সব সংকটই বাংলাদেশে দৃশ্যমান

বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশেও বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি উৎপাদন কেন্দ্রের (আইপিপি) আধিপত্য বেশি। আবার দুই দেশে বিদ্যুতের ট্যারিফ নির্ধারণের ক্ষেত্রে শর্ত ও কাঠামোও অনেকটাই সমজাতীয়। দুই দেশেই বছরের পর বছর ধরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো লাভজনকভাবে ব্যবসা করলেও দায় ও আর্থিক চাপে পড়েছে রাষ্ট্র ও জনসাধারণ।

দুই মাসে বিদ্যুতের দাম তৃতীয় দফা বাড়িয়েও কি লোডশেডিং থেকে মুক্তি মিলবে?

পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বি ডি রহমতউল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘’গরমের সময় লোডশেডিং এবারও হবে। তার কারণ হলো, এটার পেছনে যেসব প্রধান সমস্যা, তা তো দূর হয়নি। জ্বালানি সংকট তো থেকেই যাচ্ছে। আমাদের দেশে উৎপাদিত গ্যাসের ক্রাইসিস আছে। এলএনজি বা এলপিজি দাম অনেক চড়া, সেই পয়সা আমাদের নেই। কয়লা যদি কিনতে হয়, অনেক টাকা, সেটাও নেই। তেলের দামও চড়া, সেখানেও পয়সা নাই, ডলারের দামও বেশি। এসব মিলে আর বিতরণ ব্যবস্থা মিলিয়ে আমার মনে হয়, এবার গরমে তীব্র সংকট দেখা দেয়ার সম্ভাবনা আছে’’।

বিদ্যুতের দাম আবার বাড়ল

এর আগে গত জানুয়ারিতে দুই দফায় বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। এটি জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দুই ভাগে কার্যকর হয়েছে। সবশেষ ৩০ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপনে খুচরা পর্যায়ে ৫ শতাংশ এবং পাইকারি পর্যায়ে ৮ শতাংশ বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম।বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির চাপ সামলাতে এ বছর প্রতি মাসে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করছে সরকার। এ নিয়ে গত ১৪ বছরে পাইকারি পর্যায়ে ১১ বার ও খুচরা পর্যায়ে ১৩ বার বাড়ানো হলো বিদ্যুতের দাম।

কাতারের কাছে আরও এলএনজি চায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কাতারের কাছে বার্ষিক আরও ১ মিলিয়ন মেট্রিক টন (এমটিএ) তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাতারের আমিরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পরে আমাদের এনার্জির বড় সমস্যা হয়েছে। আমরা আরও বেশি জ্বালানি চাই। এখন বাংলাদেশ কাতার থেকে বছরে প্রায় ৪০ কনটেইনার জ্বালানি, অর্থাৎ ১ দশমিক ৮ থেকে ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন আমদানি করে। যেটা আমরা নিচ্ছি সেটা আমরা নবায়ন করবো। সেই সঙ্গে আমরা আরও বেশি এলএনজি চাই।

ডলার সংকটে বাড়ছে লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা

ডলার সংকটে ফার্নেস তেল নির্ভর বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো জ্বালানি ঘাটতিতে পড়ছে। এর ফলে আসন্ন গ্রীষ্মের মাসগুলোতে দেশে লোডশেডিং বাড়তে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার পাঠানো একটি চিঠি অনুসারে, পর্যাপ্ত জ্বালানি আমদানির জন্য আগামী মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে, যা মার্চ থেকে জুনে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় জ্বালানির যে অনুমান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) করেছে তার চেয়ে এক-চতুর্থাংশ বেশি।

গ্যাস–বিদ্যুতে আর কত ভর্তুকি দেওয়া যায়: প্রধানমন্ত্রী

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এত বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। ১ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১২ টাকা খরচ হয় উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘সেখানে আমরা নিচ্ছি মাত্র ৬ টাকা। তাতেই আমরা অনেক চিৎকার শুনি। গ্যাস-বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেওয়া যাবে, যদি সবাই ক্রয়মূল্য যা হবে, সেটা দিতে রাজি থাকে। তাহলে দেওয়া যাবে।