সৌরবিদ্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ মনোযোগ দরকার
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান বলেছেন যে বাংলাদেশের জন্য সৌরবিদ্যুৎ সবচেয়ে উপযোগী বিদ্যুতের উৎস হিসেবে সরকারের অগ্রাধিকারের দাবিদার। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে দেশে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট জমি নেই বলে যে ধারণা রয়েছে সেটা ভুল। তিনি রেলওয়ের নিজস্ব জায়গা এবং মহাসড়কের পাশের জায়গার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, সরকারি জমিতে ভবিষ্যতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। এ কলামের প্রথমেই আমি তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই জমির স্বল্পতার মিথ্যা ধারণাটি যে ভুল সেটা দেখিয়ে দেয়ার জন্য। আমি তার সঙ্গে একমত যে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ১০ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খুবই সম্ভব, যদি এ ব্যাপারে যথাযথ অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়। আমার কলামে আমি আরো কতগুলো সম্ভাব্য স্থানের তালিকা দেব, যেখানে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা যাবে।
এবার একেবারে বাতিল করা হলো সামিটের দ্বিতীয় এলএনজি টার্মিনাল চুক্তি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সামিট গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দেশের তৃতীয় ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল স্থাপনের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করেছে।
তবে মহেশখালীতে ইতোমধ্যেই একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল পরিচালনাকারী সামিট এ সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে।
২০১০ সালের বিশেষ একটি আইনের আওতায় আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রতিযোগিতা ছাড়াই ২০২৪ সালের ৩০ মার্চ সামিটকে এ চুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রথমে গত ৭ অক্টোবর চুক্তি বাতিল করে। এক সপ্তাহ পর সামিট এর বিরোধিতা করে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
গ্যাস-বিদ্যুৎ না দিলে বিনিয়োগ আসবে না
আগের সরকারের আমলে ইকোনমিক জোন করার ক্ষেত্রে অপরিকল্পিতভাবে উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। ইকোনমিক জোন করার সময় পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবস্থা একই সঙ্গে করা দরকার ছিল। সেটা করলে এখন শিল্প কারখানাগুলো চালু করতে কোনো সমস্যা হতো না।
বেজা এরই মধ্যে পাঁচটি ইকোনমিক জোন বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।
এলএনজি আমদানির জন্য বাংলাদেশকে কম সুদে ৩৫ কোটি ডলার ঋণ গ্যারান্টির প্রস্তাব বিশ্বব্যাংকের
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য বাংলাদেশকে ৩৫ কোটি ডলারের ঋণ গ্যারান্টির প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বর্তমান বৈদেশিক অর্থায়নগুলোর চেয়ে এই ঋণের শর্ত অনেকটাই সহজ হবে। এতে ২০২৫ সালজুড়ে দেশের দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি আমদানির প্রয়োজন মেটাতে নতুন একটি দ্বার উন্মোচন হবে।
‘রিভলভিং লেটার অব ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি’ নামে এই ঋণ গ্যারান্টির প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের একটি সংস্থা- মাল্টিলেটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সি (মিগা)। সংস্থাটি পেট্রোবাংলার পক্ষে দেশি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর জারি করা এলসি বা ঋণপত্রে ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি দেবে, যার সুবাদে নিরাপদ ও কার্যকরভাবে এলএনজি সরবরাহ নিশ্চিত হবে।
বিদ্যুতে ভর্তুকিতে শীর্ষে বাংলাদেশ, ব্যবহারে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন
বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইপিপিএ)-এর এক বিশ্লেষণে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল রেল ভবনে সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কাছে বিআইপিপিএ তাদের এই বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে।
বিআইপিপিএ জানায়, বাংলাদেশে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদ্যুতে মাথাপিছু ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ৫৩ ডলার। যেখানে ভারতের ১৪ দশমিক ২৯ ডলার, পাকিস্তানের ৮ দশমিক ৭৪ ডলার এবং ভিয়েতনামের মাত্র শূন্য দশমিক ০৪৩১ ডলার। দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা ২০২৩ সালে বিদ্যুতে ভর্তুকি বন্ধ করে দিয়েছে।
বিদ্যুৎ–গ্যাসে বকেয়া বেড়ে ৬৭ হাজার কোটি টাকা
তিন বছর ধরে নিয়মিত বকেয়া অর্থ পরিশোধের চাপে আছে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। অর্থসংকটে থাকায় বিল দিতে পারছে না পিডিবি ও পেট্রোবাংলা। আবার চাহিদামতো ডলার না পাওয়ায় বিদেশি কোম্পানির বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না।
পিডিবি ও পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, এ অবস্থায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে বকেয়া বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৭ হাজার কোটি টাকা।
বাড়তে পারে বিদ্যুতের দাম
নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়াতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে পেট্রোবাংলা। প্রায় দেড়গুণ দাম বাড়ানোর এ প্রস্তাবকে আত্মঘাতী বলে সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে আভাস পাওয়া গেছে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্যও চলছে প্রক্রিয়া। আর এর কারণ বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি প্রকল্পে ‘বাস্তবায়ন চুক্তি বা ইম্পপ্লিমেন্ট এগ্রিমেন্ট (আইএ)’ বাতিল করা। যা ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে।
বিদ্যুতের দাম কমানো সম্ভব
ভর্তুকিনির্ভর বিদ্যুৎ খাতের লোকসান নিয়ন্ত্রণে রাখতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে বরং এ খাতের অযাচিত ব্যয় ও অপচয় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জ্বালানি আমদানি ও নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে প্রতিযোগিতামূলক উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়া অনুসরণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকবে, সারা দেশে কমবে গ্যাস সরবরাহ
দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদনের পাশাপাশি কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করা হয়। চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি থাকায় নিয়মিত গ্যাস–সংকটে ভুগছে বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও আবাসিক খাতের গ্রাহকেরা। এর মধ্যে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য একটি টার্মিনাল টানা তিন দিন বন্ধ থাকবে। এতে সারা দেশে গ্যাস–সংকট আরও কিছুটা বাড়তে পারে।
চীনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের ব্যবসায়ীরা ঢাকায়, আগ্রহী বিনিয়োগে
দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সফররত চীনের একটি উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। তবে এর আগে জ্বালানির চাহিদা, বিনিয়োগ নীতি ও সহযোগিতার অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে তাঁরা জানতে চেয়েছেন।