বিদ্যুৎ খাত কীভাবে দুষ্টচক্রে আটকে আছে?

দেশের বিদ্যুৎ খাত একটি দুষ্টচক্রে আটকে আছে। কেন এবং কীভাবে এই দশা হয়েছে। টিবিএস’র এক রাউন্ড টেবিল বৈঠকে তারই বিশ্লেষণ করেছেন সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

বিদ্যুৎ-জ্বালানির প্রকল্প বাতিলে সংকট মিটবে?

সরকারের পটপরিবর্তনের পর বাতিল হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০-এর কার্যক্রম। এর ফলে কাজ শুরু না হওয়া মেগা প্রকল্পের সঙ্গে বাতিল হচ্ছে অনেক ছোট প্রকল্পও। দেশ এরই মধ্যে জ্বালানি নিয়ে সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। ফলে এই আইনের আওতার সব প্রকল্প বাতিল করা উচিত হবে কিনা, পরিস্থিতি বিবেচনায় কোনোটা রাখা সম্ভব কিনা–এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে সামনের দিনগুলোতে জ্বালানি সংকট বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিদ্যুৎ আমদানির বিল বকেয়া পড়েছে ৫৭৩৬ কোটি টাকা

ভারত থেকে দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি রয়েছে বাংলাদেশের। দেশটির সরকারি-বেসরকারি মালিকানাধীন ছয়টি কেন্দ্র থেকে এসব বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়। এ জন্য মাসে এক হাজার থেকে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা বিল পরিশোধ করতে হয়। তবে নিয়মিত ভর্তুকি না পাওয়ায় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিল পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ। এতে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে ভারত।

কুইক রেন্টালে বিনিয়োগের ৪৫০% ক্যাপাসিটি চার্জ!

২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পরই দ্রুত বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে ছোট ও মাঝারি বেশকিছু রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল কেন্দ্রের লাইসেন্স দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। তিন বছরের জন্য এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের লাইসেন্স দেয়া হলেও তা চলেছে আট থেকে ১০ বছর। কোনোটি চলেছে আবার ১২ থেকে ১৫ বছর। এসব কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জও নির্ধারণ করা হয় অতি উচ্চ হারে। এতে বিনিয়োগের প্রায় সাড়ে চারগুণ বা ৪৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ তুলে নিয়েছে কোনো কোনো কোম্পানি।

অন্তর্বর্তী সরকারকে বিদ্যুৎ খাত নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে : সিপিডি

রোববার (১৮ আগস্ট) সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সংস্কার সিপিডির প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তাগিদ দেওয়া হয়।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দ্রুত বিদ্যুৎ ক্রয়ের বিশেষ আইন বাতিল করার পাশাপাশি জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে জবাবদিহিতা বাড়াতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

স্থলভাগে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করছে পিডিবি

স্থলভাগে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। টার্মিনালটি নির্মাণ হবে পটুয়াখালীতে। এরই মধ্যে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এ-সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকারের হাতে টার্মিনালটির মালিকানা থাকবে। পিডিবি সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

৭ হাজার কোটিতে নির্মিত তিন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ

গ্যাস সরবরাহ না থাকায় জ্বালানি তেল দিয়ে উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় খুলনায় বন্ধ রয়েছে তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। উৎপাদন হচ্ছে না প্রায় ৬৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত ১৮ আগস্ট থেকে ১১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ২৮ আগস্ট থেকে ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। আর ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে এক বছর। গ্যাস না পাওয়ায় ৩৩০ ও ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি হয়। আর ১১৫ মেগাওয়াট রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টেও জ্বালানি তেল ব্যবহার করায় উৎপাদন ব্যয় বেশি হয়।

৪৫ শতাংশ পর্যন্ত লোডশেডিং: অতিষ্ঠ জনজীবন, ব্যাহত হচ্ছে শিল্প, কল-কারখানার উৎপাদন

গত কয়েকদিন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকার বাসিন্দারা।অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে এ অঞ্চলের শিল্প-কারখানাগুলোতে উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সূত্র বলছে, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) এই অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা ৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে।

এত বিদ্যুৎকেন্দ্র, তবু কেন লোডশেডিং

জ্বালানি নিশ্চিত না করেই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। চাহিদাকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিবছর বড় সময় অলস বসিয়ে রাখতে হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র। দিতে হয়েছে অলস কেন্দ্রের ভাড়া। খরচের চাপ সামলাতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়েছে, সরকারের দায় বেড়েছে। অথচ তিন বছর ধরে গরম বাড়লেই লোডশেডিংয়ে ভুগতে হচ্ছে মানুষকে।

বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে সংস্কারে ১৬ দাবি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সংস্কারে জন্য ১৬ দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রতিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক কর্মজোট (বিডব্লিউজিইডি)। আজ রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে এসব দাবি জানিয়ে একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি।