সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবহার করা গেলে বছরে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি সাশ্রয় করতে পারে বাংলাদেশ। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে দুই হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এক্ষেত্রে। একই সঙ্গে সমস্ত ডিজেল চালিত পুরো সেচ ব্যবস্থাকে সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে।তাহলে বাংলাদেশ বছরে এক বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের এলএনজি ও ডিজেল আমদানির বোঝা থেকে মুক্ত হতে পারবে। এ দুটি পদক্ষেপ নিলে, বছরে ৫.৫৮ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন হ্রাস করা সম্ভব বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক গবেষণা।
এই প্রতিবেদনটি মার্চ ১৪, ২০২৩ তারিখে কালের কন্ঠ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
ন্যাশনাল ব্যুরো অব এশিয়ান রিসার্চ (এনবিআর) নামক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থার গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। গত ৬ মার্চ গবেষণাটি প্রকাশ করে এনবিআর।
গবেষণাপত্রের লেখক ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ন্যাশনাল ব্যুরো অফ এশিয়ান রিসার্চের (এনবিআর) ক্লিন এনার্জি ফেলো শফিকুল আলম বলেন, ‘বর্তমান জ্বালানি সংকট বাংলাদেশের জন্য ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতামূলক নবায়নযোগ্য শক্তির সক্ষমতা গড়ে তোলার পাশাপাশি এলএনজিরর মতো ব্যয়বহুল এবং অস্থির বাজারদরের জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা এবং আমদানি হ্রাস করার সুযোগ।’
তিনি আরো জানান, ‘রুফটপ সিস্টেম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বর্তমানে খরচ দাঁড়ায় প্রতি কিলোওয়াট ৫.২৫ টাকা। সুতরাং শিল্পগুলো দিনের বেলায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের খরচ গ্রিড বিদ্যুতের খরচের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমাতে পারে। একইভাবে ইউটিলিটি-স্কেল সোলার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় প্রতি কিলোওয়াট ৭.৬ টাকা, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচের চেয়ে প্রায় ১৪ শতাংশ কম।’
গবেষণাটি থেকে আরো জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি জমির ওপর কোন চাপ না ফেলে ১২ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি নবায়নযোগ্য বিদ্যুত্শক্তির সক্ষমতা তৈরি করতে পারে যদি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ছাদ এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ব্যবহার করা হয় এবং ডিজেল চালিত সেচ ব্যবস্থাকে সৌর-বিদ্যুৎ দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হয়।
গবেষণায় আরো যেসব জরুরি বিষয় জানা যায়
দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের সবুজ অর্থায়ন স্কিমের আওতায় বর্তমান সুদের হার নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য অনুকূল। তবে দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুতের বিপুল সরবরাহ ত্বরান্বিত করতে হলে আন্তর্জাতিক অর্থায়নের প্রয়োজন হবে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যবহার বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে এবং স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহে অবদান রাখবে।